ইউরোজোনে পোশাক রপ্তানিতে সুবাতাস

ইউরোজোনে পোশাক রপ্তানিতে সুবাতাস

তাজা খবর:

ইউরোজোনে রপ্তানিতে সুবাতাস দেখতে পাচ্ছেন বাংলাদেশি তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকরা। তাদের ভাষ্য, ইউরোপের ১৯ দেশ নিয়ে গঠিত ইউরোজোন বা ইউরো অঞ্চল অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে এখন চাঙা অবস্থায়। ফলে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে এখানে ১০ শতাংশ রপ্তানি বৃদ্ধির আশা করা হচ্ছে। তারা জানান, বর্তমানে বাংলাদেশি পোশাকপণ্যের ৬০ শতাংশই রপ্তানি হয় ইউরোপে। বিশেষ করে ইউরোপের প্রভাবশালী অর্থনীতির দেশ জার্মানিতে ৩০ শতাংশ পোশাক রপ্তানি করছে বাংলাদেশ।

এ প্রসঙ্গে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য পোশাক রপ্তানিতে সুদিন আসছে। আমাদের রপ্তানির সবচেয়ে বড় বাজার ইউরোপ। এসব দেশ থেকে নতুন নতুন অর্ডার পাচ্ছে কারখানাগুলো। ফলে এখন আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছি। এখন প্রায় প্রতিটি কারখানায় ৭০ ভাগ বুকিং আছে। ছোট ছোট কিছু কারখানা একটু সমস্যায় আছে। আসছে সেপ্টেম্বর, অক্টোবরে পরিস্থিতি ৯০ ভাগ ভালো হয়ে যাবে।’ তাঁর প্রত্যাশা, করোনার ভ্যাকসিন যদি চলে আসে তবে রপ্তানি ২০ ভাগ বাড়বে। তিনি জানান, বাংলাদেশের একমাত্র সুবিধা সস্তা শ্রম এবং পণ্যের কম দাম যা না থাকলে অবকাঠামোগত কারণে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাকের বাজার অন্য দেশে চলে যাবে।

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সহসভাপতি শহিদুল আজিম বলেন, ‘দুই দফা অর্থনৈতিক মন্দায় ভোগার পর উন্নতি ঘটিয়ে ইউরোজোনের দেশগুলোয় এখন চাঙাভাব বিরাজ করছে। পুরো ইউরোপে টিকা দেওয়া হয়েছে। ফলে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য এখন সচল। শপিং মলগুলো খুলেছে। এক কথায় বলতে পারি আমাদের তৈরি পোশাকপণ্যের ৬০ শতাংশ রপ্তানির গন্তব্য ইউরোপে এখন সুবাতাস বইছে। ফলে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে আরও ১০ শতাংশ বেশি পোশাকপণ্য রপ্তানি সম্ভব হবে।’

সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, করোনকালে বাংলাদেশি পণ্যের অন্যতম গন্তব্য ইউরোপের দেশগুলোয় রপ্তানির সম্ভাবনা বাড়ছে। উন্নত বিশ্বের দেশগুলো চীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় এ সম্ভাবনা দেখছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের আশা, চীন নিয়ে উন্নত বিশ্বের নতুন চিন্তাভাবনার কারণেই বাংলাদেশের রপ্তানি বহুগুণে বাড়বে। কারণ ইউরোপের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। ফলে সেখানে পণ্যের চাহিদাও বাড়বে। এ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে অবকাঠামো সংকট, শুল্কায়ন ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ জরুরি।

জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকারও ইউরোপে নতুন বাজার গড়তে কাজ শুরু করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে তৈরি পোশাক রপ্তানির ৩০ ভাগেরই গন্তব্য জার্মানি। অবকাঠামোগত সংকট কমাতে পারলে বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে বিপুল পরিমাণ তৈরি পোশাক রপ্তানির সম্ভাবনা আছে। ব্যবসায়ীদের অভিমত, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা, চীন থেকে জাপান ও ইউরোপের মুখ ফিরিয়ে নেওয়া বাংলাদেশের জন্য নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে। ব্যবসায়ীরা চান সস্তা শ্রম, উন্নত যোগাযোগ, ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব শুল্ক-কর নীতি। এসব দিতে পারলে বাংলাদেশের সামনে করোনার পর যেমন বাড়বে রপ্তানি, তেমনি আসবে বিদেশি বিনিয়োগ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *