শেখ হাসিনা বাংলার মানুষের আলোর দিশারী: নৌ প্রতিমন্ত্রী
তাজা খবর:
নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশকে অন্ধকারে তলিয়ে দিয়েছিলেন জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়া। সেই অন্ধকার দেশকে আজ আলোর মুখ দেখাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই ১৬ কোটি মানুষ আজ বলছে, শেখ হাসিনা শুধু প্রধানমন্ত্রীই নন, শেখ হাসিনা হচ্ছেন বাংলার মানুষের আলোর দিশারী।
বৃহস্পতিবার জামালপুর সংলগ্ন বগুড়ার সারিয়াকান্দির কাজলা ইউপির জামথল ঘাটে জামথল-সারিয়াকান্দি ফেরি সার্ভিস উদ্বোধনী উপলক্ষে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সভার আয়োজন করে সারিয়াকান্দি আওয়ামী লীগ।
নৌ প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, নদীমাতৃক বাংলাদেশকে রক্ষা করতে ১০০ বছরের ডেল্টা প্ল্যানের আওতায় ‘যমুনা করিডোর’ প্রকল্প হাতে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ২৩ আগস্ট ওয়াশিংটন ডিসিতে যমুনার করিডোর প্রকল্প নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ভার্চুয়াল সভা হতে যাচ্ছে। যমুনা পাড়ের মানুষ যাতে আর নদী ভাঙনের শিকার না হয়, তারই স্থায়ী সমাধানের পথ খুঁজছেন প্রধানমন্ত্রী। যমুনা পাড়ে লাখ লাখ কোটি টাকার নানামুখী উন্নয়ন কাজ হবে। বিশাল আয়তনের নতুন নতুন ভূমি পাওয়া যাবে। যমুনায় হারিয়ে যাওয়া জমি আবার এ এলাকার মানুষদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে। যমুনাপাড়ে গড়ে তোলা হবে নতুন শহর। বদলে যাবে যমুনাপাড়ের মানুষের জীবনযাত্রা। শেখ হাসিনার সরকারের এ মেয়াদের মধ্যেই যমুনা করিডোরের কাজ শুরু হবে।
তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নদী শাসন নয়, নদী ব্যবস্থাপনা নীতিতে বাংলাদেশের সব নদ-নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় পুরাতন ব্রহ্মপুত্রের বাহাদুরাবাদ থেকে শীতলক্ষ্যা পর্যন্ত দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ড্রেজিং কার্যক্রম চলছে। ড্রেজিং কার্যক্রম শেষ হলে অতীতের ন্যায় বড়বড় জাহাজ যমুনা নদী হয়ে ব্রহ্মপুত্রের জামালপুর, শেরপুর হয়ে নারায়ণগঞ্জে চলাচল করবে। এ ময়মনসিংহ অঞ্চলের ছোটবড় যত নদী আছে সেই সমীক্ষা এরই মধ্যে হয়ে গেছে। সেই নদীগুলোও ড্রেজিং করে নদী ব্যবস্থাপনার মধ্যে আনা হবে।
জামথল-সারিয়াকান্দি ফেরি সার্ভিস উন্নয়ন প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপাতত এ রুটে যাত্রীবাহী একটি লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। এটি দিনে চারবার যাত্রী পারাপার করবে। এ ঘাটে যাওয়ার জন্য আগামী একমাসের মধ্যে জামথল খেয়াঘাট থেকে দক্ষিণে মূলঘাট পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার রাস্তা পাকা করে দেয়া হবে। বিআইডাব্লিউটিএর চেয়ারম্যান গোলাম সাদিক আজকে কথা দিলেন আগামী শুকনো মৌসুমে অর্থাৎ ডিসেম্বর মাসের মধ্যে এ রুটের দুই পাড়ে স্থায়ী ঘাট, পন্টুন নির্মাণসহ সব অবকাঠামো নির্মাণ শেষে এখানে যাত্রী ও পণ্যবাহী ভারী যানবাহন পারাপার শুরু করা হবে। তখন এ রুটে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফেরি সার্ভিসের ব্যবস্থা করা হবে। বগুড়া ও জামালপুরবাসীর মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরিতে এ রুটে যা যা করা দরকার তার সবই করে দেওয়া হবে।
বগুড়া-১ আসনের এমপি ও সারিয়াকান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহাদারা মান্নানের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডাব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদিক, জামালপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী, সারিয়াকান্দির পৌরর মেয়র মো. মতিউর রহমান, মাদারগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. ওবায়দুর রহমান বেলাল, সোনাতলা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মিনহাজ উজ জামান লিটন, মাদারগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মির্জা গোলাম কিবরিয়া কবির, প্রয়াত এমপি আব্দুল মান্নানের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন সজল প্রমুখ।
মতবিনিময় সভা শেষে নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মির্জা আজম এমপি ও সাহাদারা মান্নান এমপি অন্যান্য অতিথিদের নিয়ে জামথল খেয়াঘাট থেকে প্রায় দুই কিলোমিটর দূরে যমুনার পাড়ে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত নামের ২০০ আসনের লঞ্চের (সি ট্রাক) উদ্বোধন করেন। সি ট্রাকটি প্রথম যাত্রায় দুই শতাধিক যাত্রী নিয়ে সারিয়াকান্দির কালিতলা ঘাটের উদ্দেশ্যে জামথল ঘাট ছেড়ে যায়।