আসন্ন বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় আসবে ৮৭ লাখ মানুষ

আসন্ন বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় আসবে ৮৭ লাখ মানুষ

একাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় ও ২০১৯ সালের বাজেট অধিবেশন আগামী ১১ জুন বিকাল ৫টায় শুরু হবে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের তৃতীয় মেয়াদের এই প্রথম বাজেটকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে অনেক জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়ে গেছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন মান উন্নয়নে সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে নতুন এই বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় উপকারভোগীর লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হবে বলে জানা যায়। এ লক্ষ্যে আসন্ন এ বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় আসছে ৮৭ লাখ মানুষ। যার আওতায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ছিল প্রায় সাড়ে ৭৩ লাখ মানুষ। সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের পরিধি বাড়ানোর এ উদ্যোগটি ইতোমধ্যেই সাড়া ফেলেছে জনসাধারণের মনে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন মান উন্নয়নের লক্ষ্যে নতুন করে ৮৭ লাখ মানুষ এই নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় যুক্ত হলে গ্রামীণ জনপদের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমানের সামগ্রিক উন্নয়ন বৃদ্ধি পাবে বলেই মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকগণ।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সুবিধাবঞ্চিত, হতদরিদ্র, বিধবা, অসচ্ছল মানুষ, প্রতিবন্ধী, মুক্তিযোদ্ধাসহ প্রায় সব ধরনের উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়ানো হবে আগামী বাজেটে। কিছু ক্ষেত্রে ভাতার পরিমাণও বাড়বে। বাংলাদেশে বর্তমানে জাতীয় বাজেটের অধীনে একশ পঞ্চাশটি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি রয়েছে। সরকারের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, মহিলা ও শিশু বিষয়ক এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বৃহৎ কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়িত হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধা, বয়স্ক, প্রতিবন্ধী, দুস্থ নারী, চা বাগানের শ্রমিক, বিধবা ও তালাক প্রাপ্ত নারী, হিজড়াসহ পিছিয়ে পড়া মানুষদের ভাতা দিচ্ছে সরকার। আগামী বাজেটে বয়স্ক ভাতার উপকারভোগী ৪ লাখ, বিধবা ভাতার উপকারভোগী ৩ লাখ, অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা সাড়ে ৫ লাখ, জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচিতে ১০ হাজার চা-শ্রমিক ও অন্যান্য সুবিধা আরও ১৫ হাজারভোগী যুক্ত করা হবে। এজন্য বরাদ্দ বাড়ানো হচ্ছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, আসন্ন বাজেটে বয়স্ক ভাতা বাড়ানো হচ্ছে না। তবে ভাতাভোগীর সংখ্যা ৪০ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৪৪ লাখ এবং বরাদ্দ ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা করা হচ্ছে। বর্তমানে প্রতি মাসে ৫০০ টাকা হারে এ ভাতা দেওয়া হয়। আগামী বাজেটে অসচ্ছল প্রতিবন্ধীদের ভাতার আওতা বাড়িয়ে ১৫ লাখ ৪৫ হাজারে উন্নীত করা হচ্ছে। এছাড়া, বর্তমানে ৯০ হাজার অসচ্ছল প্রতিবন্ধী পরিবারের ছেলেমেয়ে শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে সর্বনিম্ন মাসিক ৭০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ১ হাজার ২০০ টাকা করে বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। আসছে বাজেটে প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত এই ভাতার পরিমাণ কিছুটা বাড়নো হতে পারে।

সূত্র জানায়, বর্তমানে ৭ লাখ দরিদ্র মায়েদের মাতৃত্বকালীন ভাতা দেওয়া হচ্ছে। নতুন অর্থবছরে এ সুবিধা দেওয়া হবে ৭ লাখ ৭০ হাজার জনকে। এ জন্য বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ৭৩৯ কোটি ২০ লাখ টাকা। এছাড়াও, কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তার আওতায় ২ লাখ ৭৫ হাজার মাকে সুবিধা দেওয়া হবে। বর্তমানে এ সুবিধা পাচ্ছেন আড়াই লাখ ল্যাকটেটিং মাদার। এর বাইরে চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় সুবিধা দিতে নতুন করে আরও ১০ হাজার চা শ্রমিককে অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে। বর্তমান এ কর্মসূচির আওতায় সুবিধা পাচ্ছেন ৪০ হাজার শ্রমিক, যা আগামী অর্থবছরে ৫০ হাজারে উন্নীত করা হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *