পুলিশের জন্য কেনা হচ্ছে ২টি অত্যাধুনিক হেলিকপ্টার

পুলিশের জন্য কেনা হচ্ছে ২টি অত্যাধুনিক হেলিকপ্টার

তাজা খবর:

পুলিশের জন্য কেনা হচ্ছে দু’টি অত্যাধুনিক হেলিকপ্টার। রাশিয়া থেকে জি-টু-জি পদ্ধতিতে হেলিকপ্টার দু’টি সংগ্রহ করা হবে। এ জন্য ব্যয় হবে ৪২৮ কোটি ১২ লাখ ৪৯ হাজার টাকা।

পুলিশ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, হেলিকপ্টার দু’টি পুলিশের হাতে আসার পর অনেকগুলো সুবিধা পাওয়া যাবে। এর মধ্যে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে দুর্গম ও দূরবর্তী অঞ্চলে পুলিশ সদস্যদের পরিবহন, সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ আপারেশন সক্ষমতা বৃদ্ধি, জরুরি পরিস্থিতিতে অগ্নিনির্বাপন, রসদ ও কার্গো পরিবহন, এরিয়াল পেট্রোলিং, ভিআইপি/গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের জরুরি গমনাগমনে সহায়তা এবং মেডিক্যাল ইভাকুয়েশন অন্যতম।

জানা গেছে, বাংলাদেশ পুলিশকে একটি আধুনিক, যুগোপযোগী ও কার্যকর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হিসেবে উন্নীতকরণের জন্য ইতোমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ পুলিশের জন্য রাশিয়ার কাছ থেকে জি-টু-জি পদ্ধতিতে দু’টি হেলিকপ্টার ক্রয়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশ পুলিশ এবং রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান জেএসসি রাশিয়ান হেলিকপ্টারের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। জেএসসি রাশিয়ান হেলিকপ্টারের সাথে আলোচনার মাধ্যমে মূল্য নির্ধারণ করা হয়। পুলিশ বাহিনীর জন্য এমআই-১৭১এ২ মডেলের দু’টি হেলিকপ্টার কিনতে নীতিগত অনুমোদনের জন্য অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হবে।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ পুলিশকে একটি আধুনিক, যুগোপযোগী ও কার্যকর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে উন্নীতকরণের লক্ষ্যে পুলিশ অধিদফতরের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি অর্থ মন্ত্রণালয়, জননিরাপত্তা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনক্রমে পুলিশ অধিদফতরের সাংগঠনিক কাঠমোতে দু’টি হেলিকপ্টার টিওঅ্যান্ডইভুক্তির সরকারি আদেশ জারি করা হয়।

সরকারের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়ার জেএসসি ‘রাশিয়ান হেলিকপ্টারস’ কর্তৃপক্ষ তাদের তৈরি হেলিকপ্টার কারখানা পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানায়। কিন্তু করোনার কারণে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিদল রাশিয়া সফর করতে না পারায় জি-টু-জি পদ্ধতিতে ক্রয় কার্যক্রম ভার্চুয়ালি পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত হয়।
জানা গেছে, জি-টু-জি পদ্ধতিতে পুলিশের জন্য দু’টি হেলিকপ্টার ক্রয়ের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী জননিরাপত্তা বিভাগ কার্যপরিধিসহ জি-টু-জি কমিটি গঠন করে। পরে টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেশন কমিটি এবং মূল্য নির্ধারণ/নেগোশিয়েশন কমিটি গঠন করে। টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেশন কমিটির সদস্যরা বাংলাদেশ পুলিশের জন্য মাল্টিইঞ্জিন, অত্যাধুনিক ককপিটসমৃদ্ধ মিডিয়াম ক্যাটাগরির হেলিকপ্টার নির্বাচনের বিষয়টি বিবেচনায় আনেন। টেকনিক্যাল কমিটির সদস্যরা রাশিয়ান হেলিকপ্টারসের বিভিন্ন মডেলের হেলিকপ্টারের স্পেসিফিকেশন যাচাই-বাছাই করে আধুনিক ও যুগোপযোগী এমআই-১৭১এ২ মডেলের দু’টি হেলিকপ্টার ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেয়।

এরপর গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। রাশিয়ান প্রতিষ্ঠানের একজন জেনারেল এবং বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষে আইজিপি বেনজীর আহমদ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এসময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন বলে সূত্র জানিয়েছে।

জানা গেছে, টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেশন কমিটি কর্তৃক চূড়ান্তকৃত টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী জেএসসি ‘রাশিয়ান কেলিকপ্টারস’ আলোচনার মাধ্যমে একাধিক আর্থিক প্রস্তাব দাখিল করে। দাখিলকৃত দর প্রস্তাবগুলোর ভিত্তিতে রাশিয়ান হেলিকপ্টারসের সাথে দাম নির্ধারণ/নেগোসিয়েশনের জন্য কমিটি গত জুন ও আগস্ট মাসে বেশ কয়েকটি সভা করে হেলিকপ্টারের দাম নির্ধারণ করে। হেলিকপ্টার দু’টির দাম নির্ধারণ হয় ভ্যাট, ট্যাক্স, বীমা ও আনুষঙ্গিক ব্যয় ছাড়া বাংলাদেশী মুদ্রায় ৪২৮ কোটি ১২ লাখ ৪৯ হাজার টাকা।

আজ বুধবার অনুষ্ঠিতব্য অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এই প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *